পাহাড়ি ঘরঃ উজ্জ্বল চৌধুরী
সঞ্চিতা, তুমি রাত জেগেছো কখনো
দেখেছো কি তুমি রাতের মায়া রূপ
আমি তো ঘুমাই রাত্রি সকাল হলে
রাত জেগে জেগে ভাবি তুমি কেন পাশে চুপ!
সঞ্চিতা, কখনো তুমি সমুদ্র স্নানে গেছো
দেখেছো কি তার মন উজাড় করা ঢেউ?
হররোজ আমি সমুদ্র জলে ভাসি
পাশে এসে দাঁড়ায় অজানা অচেনা কেউ।
সঞ্চিতা, তোমাকে একদিন পাহাড়ে নিয়ে যাবো
সেখানে দাড়িয়ে তুমি ডাকবে আপন নাম ধরে
আমি তো ডেকেছি শুধু সঞ্চিতা সঞ্চিতা
শুনেছি প্রতিধ্বনি হয়ে আসছে ফিরে ফিরে।
সঞ্চিতা, তুমি ঘুমাও আমার বুকে
আমিও ঘুমাবো অনেক রাত্রির পর
ঘুমহীন রাত না আসুক ফিরে আর
চলো বাঁধি পাহাড়ে কুঁড়ে ঘর।
একটা কবিতা লিখতে চাইঃ শাইনি শিফা
অনেকবছর ধরে একটা কবিতা লিখবো ভাবছি।
কবিতাটায় কোন অশ্রাব্য বুলি থাকবে না।
কোন পতিতার কথা, কোন ধর্ষিতার কথা,
কোন আঁচল খসে পড়া নারীর কথা থাকবে না।
আমার কবিতায় কোন গুলির শব্দ থাকবে না।
ঐ যে শতচ্ছিন্ন লুঙ্গিপড়া রিকসাওয়ালা,
ঝুমবৃষ্টি মাথায় নিয়ে ক্ষীনকায় শরীরে চলেছে--
তার কথা থাকবে না।
রাস্তার পাশে পলিথিন দিয়ে ঢাকা চাল উড়ে উড়ে
আকাশ ফুঁড়ে যাচ্ছে ---
তার কথা থাকবে না।
যে মেয়েটি হাঁটুপানিতে আটকে পরীক্ষা না দিতে পেরে
বুক ভাসালো-- তার কথা থাকবে না।
অথবা,
যে মেয়েটি রোজ রাতে রাস্তায় দাঁড়ায় বুকের আঁচল ঠেলে, গাঢ় লিপষ্টিক পড়ে--
তার কথা থাকবে না।
যারা বড়সড় লেখক বলে পরিচিত
অযথাই কবিতায় নগ্নতা আর খিস্তি খেউর তুলে আনে
(তখন নিজেকে কেন্নোর মত গোল করে গুটিয়ে নেই
লজ্জাবতী পাতার মত চুপসে রই...)
তার কথাও থাকবে না।
আমার কবিতায় শুধু মস্তিস্কহীন 'তুমি'র কথা থাকবে
আর দুর্গন্ধ ভরা কর্দমাক্ত ভালোবাসার কথা থাকবে।
মধ্য দুপুরের সুরঃ উজ্জ্বল মাহমুদ
মনে আছে তোমার
সেদিনের কাঠফাটা রোদে
বাতাসে ভাসছিলো
ঘুঘুর কন্ঠে মধ্য দুপুরের সুর
তুমি
ঘাম ভেজা বদনে
ছাগলকে খাওয়াচ্ছিলে
আমি বেসামাল গরমে
আলের ধারে বসে ঘাস কাটছিলাম
গরুকে খাওয়াবো বলে
বারবার
আমার দিকে আড়চোখে
তাকাতেই তোমার
ছাগল ছুটে গিয়েছিলো
শরীরের সবটুকু শক্তি দিয়ে
দৌড়ে দৌড়ে
ছাগল ধরতে না পারা
ক্লান্ত খুবই ক্লান্ত
নেতিয়ে-শুইয়ে পড়েছিলে
খাঁ খাঁ রোদ বিছানো বিলে
অগত্যা
ছাগল
তোমার হাতে ধরিয়ে দিতেই
শ্রান্ত সুরে
বিড়বিড় করে বলেছিলে
তোমার এমন স্পর্শে
মুহুর্তে দূর হয়
আমার
সকল ক্লান্তি অবসাদ
সীমাহীন প্রশান্তিতে
উজ্জীবিত হই জাগ্রত হই
স্বপ্নবোনা এই পৃথিবীতে।
সংকলনঃ দৈনিক আলোকবর্তিকা সাহিত্য ডেস্ক