"ক্যান্সার আক্রান্ত বারো বছরের মেয়েটাকে ডাক্তার আঙ্কেল আদর করে জিজ্ঞেস করলেন, বড় হয়ে কি হতে চাও মা?
মেয়েটি বললো, বড় হওয়া পর্যন্ত বাঁচতে চাই।
আহ্! স্বপ্নের কত রঙ!
আকাঙ্ক্ষার কত আঙ্গিক!
বাঁচার আকুতি কত হৃদয়বিদারক!
হাত বিহীন মানুষটার স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু যদি আমার হাতগুলো ঠিক থাকতো।
পা ছাড়া লোকের সাধ তো একটাই, যদি একদিন চলতে পারতাম সবার মতই।
অন্ধের স্বপ্ন যদি একটাবারের জন্য দেখতে পারতাম দুনিয়ার রঙ।
আর বোবার সব আকাঙ্ক্ষা যেন একটু কথা বলতে পারলেই পূরণ হতো।
মেধাবীর বাবা মা যখন সন্তান গোল্ডেন না পাওয়ার কারণে বকাঝকা করছে, তখন শত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সন্তানকে ঘিরে তাদের বাবা মায়ের স্বপ্ন, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার নয়, সে শুধুমাত্র স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক, আপাতত এটুকুই!
আইসিইউ-র ভেতরের মানুষটা শুধু একটাবার কাঁচের দরজার এপাশে বেরুতে চায়।
আপনি যখন লেখাটা পড়ছেন, ঠিক এই মূহুর্তে মৃত্যুশয্যায় হাজারো মুমূর্ষের আর একটা মাত্র নিঃশ্বাস নেয়ার হাহাকার।
পঙ্গু হাসপাতালের হাহাকার দুনিয়ার শত ডিপ্রেশনকে ভুলিয়ে দেয়।
শীতের রাতে ফুটপাত, বাসস্টপ কিংবা রেলস্টেশনে মানুষের রাত্রি যাপন করার দৃশ্য বস্তিবাসীদের কষ্টও ভুলিয়ে দেয়। দিনশেষে তার মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুন রয়েছে, এদের সেটাও নেই।
আপনার গ্রামের সবচেয়ে বড়লোক, শহরের উঁচু দালান দেখে নিজেকে মিসকিন ভাবে।
দুনিয়া ধোঁকার বস্তু, কখনো কাউকে তৃপ্ত করবে না ।
যেন হাওয়াই মিঠাই।
আপনি যত অপূর্ণতায়ই ভোগেন, ভেবে দেখবেন,
"আপনার রব আপনাকে এমন অনেককিছু দিয়ে রেখেছন, যা অনেকের কাছে এখনো স্বপ্ন।"
যে চোখ দিয়ে পড়ছেন, অনেকের সেই চোখে আলো নেই। তিনবেলা পেটপুরে খেয়ে, ভালো জামাকাপড় পরে, স্বাচ্ছন্দ্যে দুনিয়ার জমিনে চলতে পেরে, সুস্থ থেকেও যদি আপনি বলেন ডিপ্রেশনে আছেন, বেঁচে থাকতে ভালো লাগছে না বলেন,
তাহলে আপনি যেন আপনার মালিকের নেয়ামতগুলোর না শুকরিয়া করছেন।
আত্মহত্যা মহাপাপ মনে হয় এই কারণেই।
কবি কয়েক লাইনে কত সুন্দর বুঝিয়েছেনঃ
“একদা ছিলনা জুতা চরণ যুগলে
দহিল হৃদয় মম সেই ক্ষোভানলে।
ধীরে ধীরে চুপি চুপি দুঃখাকুল মনে
গেলাম ভজনালয়ে ভজন কারণে।
সেথা দেখি একজন পদ নাহি তার
অমনি জুতার খেদ ঘুচিল আমার!
পরের দুঃখের কথা করিলে চিন্তন
আপনার মনে দুঃখ থাকে কতক্ষণ?"
ওমর ফারুকের ফেসবুক ওয়াল থেকেঃ
সংকলনঃ দৈনিক আলোকবর্তিকা ডেস্ক।