1. admin@dainikalokbortika.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০১ পূর্বাহ্ন
সমালোচনা বা দ্বিমত পোষণ: গণতন্ত্রের মূল কথা পুনঃ ফ্যাসিজমের আশংকা: প্রসঙ্গ যখন বিএনপি সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (পঞ্চদশ পর্ব) জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪: খুলনার ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেট এ সফল কো-অপারেটিভ এর উদ্যোগে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪ পালিত সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (চতুর্দশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (ত্রয়োদশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (দ্বাদশ পর্ব) নতুন বাংলাদেশ: জেন-জি প্রজন্মের স্বপ্ন কি আদৌ বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব? একটি বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার: দুই হাতে টাকা বানাতে বলতেন শেখ হাসিনা সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (একাদশ পর্ব)
এই মাত্র পাওয়া
সমালোচনা বা দ্বিমত পোষণ: গণতন্ত্রের মূল কথা পুনঃ ফ্যাসিজমের আশংকা: প্রসঙ্গ যখন বিএনপি সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (পঞ্চদশ পর্ব) জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪: খুলনার ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেট এ সফল কো-অপারেটিভ এর উদ্যোগে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪ পালিত সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (চতুর্দশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (ত্রয়োদশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (দ্বাদশ পর্ব) নতুন বাংলাদেশ: জেন-জি প্রজন্মের স্বপ্ন কি আদৌ বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব? একটি বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার: দুই হাতে টাকা বানাতে বলতেন শেখ হাসিনা সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (একাদশ পর্ব)

শাইনি শিফা’র ধারাবাহিক ছোট গল্পঃ লাশ (পর্ব-১)

  • Update Time : শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০২৩
  • ৫৩৬ Time View

রুবি অনেক্ষণ ধরেই শায়লার চুলের মুঠি ধরে আছে। শায়লাও রুবির গলার কাছে বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে চেপে চেপে মারার চেষ্টা করছে। চুল ধরে রাখাতে শায়লা বেশি সুবিধা করতে পারছে না। তাই হঠাৎ চিৎকার করে উঠে বললো ‘পুলিশ আইছে।’ রুবির হাতে ধরা শায়লার চুলের মুঠিটা মুহূর্তেই সামান্য ঢিলা হতেই শায়লা কষে এক লাথি মারলো রুবিকে।

কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেল রুবি। যেন সারা শরীরে ভূমিকম্পের মত ব্যাথাটা দুলে উঠলো। রুবি কোঁকাতে লাগলো। শায়লা উচু স্বরে… হারামজাদি, শয়তান, নিমকহারাম বলে গালাগাল করতে শুরু করলো।

রুবি তখনো গোঙাচ্ছে। মাথা তুলে উঠতে পারছে না। নাহলে আজ ঐ শায়লার বাপের নাম ভুলিয়ে দিত সে। হঠাৎ তার মুখে একগাদা থুতু এসে পড়লো। শায়লা তাকে থুতু মেরে কোমড়ের কাপড় নামিয়ে গজগজ করতে করতে ঘরের ভিতরে চলে গেল।

পিছন থেকে রুবি বলে উঠলো,
‘শয়তান, তোর সোয়ামীর ভাত আমি খাওয়াইতেছি, খাড়া। ‘
তারপর মাটি আঁকড়ে কাঁদতে লাগলো। জিদে, কষ্টে, রাগে, হিংসায় তার শরীরটা জ্বলে যাচ্ছে। শায়লাকে আজকেও সে কিছু করতে পারলো না। ঐ বেটি যে কবে মরবে! শায়লার চেহারা আর দেখতে ইচ্ছা করে না।

আর রুবির নিজের জামাইও বলিহারী! ম্যানকা শয়তান একটা। কিচ্ছু পারে না — পারে শুধু বউয়ের সাথে। বাড়িটা ভাড়া নেয়ার সময় বারবার করে কইলাম, ‘আমরা অন্য জায়গায় বাসা নিই। একই জায়গায় কেন থাকতে হবে?’

কে শোনে কার কথা!
দিনকে দিন বেটির বাড় বাড়তেইছে। একটা কথা একটু কওন যায় না। গায়ে যেমন ফোস্কা পড়ে যায়! আজব!

আজকে কিইবা এমন হইছিল!
আমি আমার নতুন গাছের টবটা রাখার জন্য তার জুতার বাক্সটা এট্টুখানি সরাইছিলাম। এইজন্য সে বাসায় এসে যা ইচ্ছে তাই বলা শুরু করলো! বেটির গলার জোরও দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।

রুবি ফোঁস ফোঁস করতে থাকে। চোখ দিয়ে রক্তের মতন জল গড়িয়ে পড়ে মেঝেতে। মেঝেতে হাত ঘষতে থাকে। তারপর মেঝে চাপরাতে চাপরাতে উঠে যায়। রুবির মাথা গরম হলে সেটা ঠিক হতে অনেকটা সময় লেগে যায়। আজ জামাই ঘরে আসুক। তারপর দেখাবে মজা। এভাবে আর সহ্য করতে পারছে না সে। শায়লা বয়সে আর সম্পর্কে বড় জা হয়েছে বলে কি মাথা কিনে নিয়েছে না কি?

রুবিকে পছন্দ করেছিল রুবির শ্বশুর। কলেজ থেকে ফেরার পথে।
তখন রুবি বোরখা পরে কলেজে যেত। সাদা ধবধবে ছিল রুবির গায়ের রঙ। শুধুমাত্র রুবির পা দেখেই ওর শ্বশুর বলেছিল, মিয়াটারে আমাগো বাড়িতে আনতি হবি।”
তারপর প্রস্তাব পাঠায় সেই বাড়িতে। ছেলে যদিও তেমন কিছু করে না। বাপের বিশাল সম্পত্তি দেখাশুনা করে আর কি! ছেলে ডিগ্রী পাশ। দেখতে মন্দ না।

বেশ ঘটা করেই রুবির বিয়ে হয়।
বিয়ে মানেই রুবির কাছে ছিল এক অন্যরকম ভাবনা। বিয়ের পরে স্বামীর সাথে ঘুরবে, আইসক্রিম খাবে, সিনেমা দেখবে। স্বামীর হাত ধরে নদীর পাড়ে বসে বসে বাদাম খেতে খেতে গল্প করবে। স্বামীর সাথে ঘুরতে বেড়ানো দেখে বান্ধবীরা হিংসায় জ্বলে পুড়ে যাবে।

বিয়ের দিন বাসর ঘরের খাটে বসে আছে রুবি। হঠাৎ ওকে ওর পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো একজন। সে ভেবেছিল — নিশ্চয়ই এটা তার নব্য স্বামীর কাজ। কিন্তু না। কানের কাছে এক মহিলার ফিসফিসানি শুনে চমকে উঠলো রুবি,   “আমি তোমার ভাবী গো, আমি তোমার একমাত্র ভাবী। ” রুবিরও মনটা ভরে গিয়েছিল। এই বাড়িতে অন্ততপক্ষে একজনকে পাওয়া গেল যে তাকে প্রথম দেখাতেই গলা জড়িয়ে ধরেছে। রুবিও তার ভাবীকে দুই হাত দিয়ে ধরে সামনে নিয়ে এসে কপালে কপাল ঠুকে বলেছিল, “আমি রুবি। আমাকে ভালোবাসবেন নিজের বোনের মত করে।” বড় ভাবী শায়লা রুবির কপালে চুমু খেয়ে বলেছিল,
— “তাহলে আজ থেকে তুই আমার বইন। ”
— “আইচ্ছা, বইন। আপনারে একটু সালাম করি?”
— ক্যান, আমি কি তোর খালা? সালামই বা করবি ক্যান আর ‘আপনি’ করেই বা বলবি ক্যান?

তারপর দুজনেই চুপিচুপি হেসে নিল কিছুক্ষণ। একটু পরেই কয়েকজন ভাইবোনদের সাথে টোপর মাথায় ঘরে ঢুকলো আলম। আলম মুখে রুমাল দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রুবিকে দেখছে। শায়লা আলমের দিকে তাকিয়ে বললো,
— নাও, এবার তোমরা মিলমিশ করো। আমাদের মিলমিশ হয়ে গেছে।
কথাটা বলে রুবিকে একটা দুষ্টুমির ধাক্কা দিয়ে চলে যায় শায়লা।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই রুবি মনে মনে শায়লাকে খুঁজতে থাকে। শায়লার পাত্তা পাওয়া যায় না। অনেকেই এসে এসে উঁকি দিয়ে নতুন বউকে দেখে যায়। নতুন বউয়ের কাজটা যে কি — সেটা বুঝে উঠতে পারে না রুবি। রুবি বাথরুমে গিয়ে বালতি থেকে পানি নিয়ে মুখ ধোয়। ফিরে এসে আলমকেও আর দেখে না।
যা বাবা!! এখন কি হবে? কি করবে রুবি? কি করা উচিত?
হঠাৎ একটা পিচ্চি মেয়েকে দেখতে পেয়ে বলে ওঠে, এই শোন, বড় ভাবী আছে না! তারে একটু ডাইকা দিবা?
পিচ্চি মেয়েটা গাল ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। তারপর বলে, কি কইবেন, আমারে কন। আমি এই বাসার একমাত্র মাইয়া। রুবি হাতের ইশারায় ফাতেমাকে কাছে ডাকে। তারপর বলে, তুমি তো অনেক ছুডো, তাই তোমারে কওন যাইবো না। আমার তো তোমার বড় ভাবীকে দরকার।

ফাতেমা দৌড়ে বের হয়ে যায়। একটু পরেই ফিরে আসে।
” ভাবী সবাইরে খিচুরি খাওয়াইতাছে। কইছে, অহন যাইতে পারুম না। আর আপনারে আমার লগে হেইখানে যাইতে কইছে।” এবার রুবি আরো অস্বস্তিতে পড়ে যায়।
তারপর নিজের শাড়িটাকে কোনোমতে সামলে নিয়ে
সেই মেয়েটার পিছনে পিছনে হাঁটতে শুরু করে।

খাবারের ঘরটা মোটামুটি বড়। তবে, অগোছালো। কিছু প্লাস্টিকের চেয়ারও বোধহয় ভাড়া করা হয়েছে। সেখানে অনেক লোকজন গো-গ্রাসে খিচুরী খাচ্ছে শুধুমাত্র আচারের তেল দিয়ে। কিন্তু এমন মজা করে খাচ্ছে যে মনে হচ্ছে এর চেয়ে মজার খাবার এই পৃথিবীতে নেই। রুবি সেখানে ঢুকে কি যে করতে হবে — বুঝতে না পেরে সকলের উদ্দেশ্যে একটা সালাম দিল। কেউ কেউ নতুন বউয়ের সালামের উত্তর দিল আবার কেউ কেউ দিল না। একজন বলে উঠলো, “বুজলা, নতুন বউ, খাওনের সময় সালাম দিতে নাই। খাওন হচ্ছে একটা ইবাদত।” রুবি অবাক হয়ে গেল। সে কি তাহলে সালাম দিয়ে ভুল করেছে? কি জানি বাপু!!

“ভাবী, আমার কিছু করোন লাগবো?”

“না, তুমি খাইতে বহো।”

“তাইলে,আপনেও আহেন,ভাবী। একলগে খাই। ”

তারপর থেকে দুজনে একসাথে খাওয়া, খাওয়ার পরে একসাথে রোদ পোহানো, উকুন বেছে দেয়া চলতে লাগলো।

নজরুল ভাই ভালো মানুষ। ভাই আর ভাবীর মধ্যকার খাতিরটা অন্যরকমের। উপর থেকে তাদের ভিতরকার টানটা কেউ বুঝবে না।

ভাবী একটু কম কথা বলে। নীরবে সংসারের কাজ করে যায়। রুবি ধীরে ধীরে শায়লাকে ভালোবাসতে শুরু করে। কিন্তু কোথায় যেন একটা ফারাক রেখে দেয় শায়লা নিজেই। রুবি সেটা বুঝতে পারে না।

(রুবি ও শায়লার পরবর্তী গল্প পড়তে পর্ব-২ এ চোখ রাখুন আগামী শুক্রবার)

শাইনি শিফা, আবৃত্তিকার, বাংলাদেশ বেতার ও লেখিকা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

https://www.moralparenting.org/

Categories

© All rights reserved © 2023 দৈনিক আলোকবর্তিকা
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: CloudVai-ক্লাউড ভাই