1. admin@dainikalokbortika.com : admin :
রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন
সমালোচনা বা দ্বিমত পোষণ: গণতন্ত্রের মূল কথা পুনঃ ফ্যাসিজমের আশংকা: প্রসঙ্গ যখন বিএনপি সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (পঞ্চদশ পর্ব) জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪: খুলনার ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেট এ সফল কো-অপারেটিভ এর উদ্যোগে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪ পালিত সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (চতুর্দশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (ত্রয়োদশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (দ্বাদশ পর্ব) নতুন বাংলাদেশ: জেন-জি প্রজন্মের স্বপ্ন কি আদৌ বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব? একটি বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার: দুই হাতে টাকা বানাতে বলতেন শেখ হাসিনা সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (একাদশ পর্ব)
এই মাত্র পাওয়া
সমালোচনা বা দ্বিমত পোষণ: গণতন্ত্রের মূল কথা পুনঃ ফ্যাসিজমের আশংকা: প্রসঙ্গ যখন বিএনপি সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (পঞ্চদশ পর্ব) জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪: খুলনার ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেট এ সফল কো-অপারেটিভ এর উদ্যোগে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪ পালিত সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (চতুর্দশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (ত্রয়োদশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (দ্বাদশ পর্ব) নতুন বাংলাদেশ: জেন-জি প্রজন্মের স্বপ্ন কি আদৌ বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব? একটি বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার: দুই হাতে টাকা বানাতে বলতেন শেখ হাসিনা সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (একাদশ পর্ব)

সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (ত্রয়োদশ পর্ব)

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১০৯ Time View

আগের পর্বে বলেছি কর্মজীবনের শুরুর দিকে আমি মৎস্য বিজ্ঞানী হিসেবে সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত হবার সুযোগ পাই আওয়ামী লীগ আমলে। তখন ১৯৯৮ সাল, সরকার পরিচালনায় শেখ হাসিনার দুই বছরের কাছাকাছি অতিবাহিত হয়েছে। দেশের প্রশাসনের সকল ক্ষেত্রে জিয়া, এরশাদ ও খালেদা মডেল প্রতিষ্ঠিত অর্থাৎ ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সন্ত্রাস, নোংরা ছাত্র রাজনীতি ইত্যাদি নেতিবাচক ধারাতেই চলছিলো দেশ। আমি অন্তত খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার শাসনের উল্লেখযোগ্য কোন পার্থক্য বুঝতে পারিনি। গৎ বাঁধা একই ধারায় চলমান দেশের শাসন ব্যবস্থার কারনে সাধারণ মানুষ ঘুষ ও দুর্নীতির সকল স্তরের সাথে একাত্ম হয়ে পড়ে।

একটা উদাহরন দিলে বিষয়টা আরও পরিষ্কার হবে। আমার এক নিকটাত্মীয় মৎস্য প্রক্রিয়াজাত কোম্পানীর কমার্সিয়াল বিভাগে চাকরি করতেন। আমি যেহেতু ফিসারিজ সাইন্স থেকে স্নাতক ডিগ্রীধারী তিনি চাইতেন আমি মৎস্য মান নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের সরকারি চাকরিটা যেন করি। কারণ মৎস্য মান নিয়ন্ত্রণ অফিসের ইন্সপেক্টররা নাকি প্রতিটি মৎস্য প্রক্রিয়াজাত কোম্পানীর কাছ থেকে প্রচুর ঘুষ নিয়ে রপ্তানি ছাড়পত্র দিতো এবং খুবই হয়রানি করতো। স্বাভাবিকভাবেই একজন নিকটাত্মীয় কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইন্সপেক্টর হতে পারলে তাঁর ভোগান্তি নিশ্চয়ই কিছুটা কমতে পারে অথবা ঐ চাকরিতে যেহেতু মোটা অংকের টাকা কামানোর উপায় আছে সেই ভাবনা থেকেও তিনি এমনটা আশা করেছিলেন?

এবার আসি আমিও যে চরম সততার সাথে যাথাযথভাবে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে মৎস্য বিজ্ঞানীর চাকরিটা নিশ্চিত করতে পারবো এমন নিশ্চয়তা কিন্তু ছিলো না। কেননা, আমি লিখিত পরীক্ষা দিতে গিয়ে জানতে পারলাম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত চল্লিশ জন মৎস্য বিজ্ঞানী পদে নাকি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য অনুষদ হতে ছাত্রলীগ থেকে পাঠানো তালিকা অনুযায়ীই শুধু নিয়োগ দিতে হবে। আমরা কয়েকজন ময়মনসিংহ চাকরির লিখিত পরীক্ষা দিতে যাবার সময় ঢাকা থেকে যে বাসে চেপেছিলাম সেখানে বাকৃবি’র তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতিও ছিলো। আমরা যখন খুব মনযোগী হয়ে পরীক্ষা প্রস্তুতির জন্য নোট পড়ছিলাম তখন সে নিজের বিরাট পরিচয়টি দিয়ে আমাদের সাথে পরিচিত হয়ে গালগল্প জুড়ে দিলো। ভাবখানা এমন যে এসব পড়েটরে লাভ নাই ভাইয়া, এসেই যখন পড়েছেন ক্যাম্পাস ঘুরেটুরে চলে যান! আভাসে ইঙ্গিতে সে বুঝিয়ে দিলো মহাপরিচালক যদি ছাত্রলীগের তালিকা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে অস্বীকার করে তাহলে নিয়োগ পরীক্ষাই বাতিল করা হবে!

অষ্টমাশ্চার্যের মতো চোখ চেয়ে দেখলাম লিখিত পরীক্ষার খাতা ও প্রশ্নপত্র বিলি হবার দুই তিন মিনিটের মাথাতেই আমার কাছাকাছি একজন নিয়োগ প্রত্যাশী হঠাৎ করে উঠে দাড়ালো। পিনপতন নীরবতার মাঝে সে উঠে দাঁড়ালে একজন কর্তব্যরত ব্যক্তি তার দিকে এগিয়ে গিয়ে বললেন- কোন সমস্যা? চাকরি প্রত্যাশী প্রার্থী বল্ল- পানি খাবো। বেশ অবাক হয়ে কর্তব্যরত ব্যক্তি বললেন- কেবলই তো শুরু হলো পরীক্ষা, এখুনি পানি কেনো, একটু পরে খেও। কিন্তু নাছোড়বান্দা প্রার্থী পানি না খেয়ে ছাড়বে না! আমার পরীক্ষার প্রশ্ন দেখার মাঝে এমন পানি খেতে চাওয়ার ব্যপারটায় মনোযোগ ঘুরে গেলো। তার দিকে তাকাতেই দেখি পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে ইচ্ছে করেই নিচে ফেলে দিলো! ঠাস শব্দ করে কাঁচের গ্লাস ভেঙ্গে খান খান হয়ে যাবার কারনে পরীক্ষার হলে উপস্থিত প্রায় এক দেড়শ পরীক্ষার্থী সেদিকে ঘুরে তাকালো। তখন সেই ছেলেটি তারস্বরে চিৎকার দিয়ে উঠলো প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে, আমরা পরীক্ষা দেবো না। ব্যাস, চারিদিক থেকে আরও কয়েকজন উঠে নিজেদের খাতা প্রশ্ন ছিড়ে ফেলে পাশের জনদেরও ছিড়ে ফেলতে নির্দেশ দিতে থাকলো।

আমরা হতভম্ব হয়ে আজগুবি কান্ডকারখানা দেখছিলাম! সব ইনভিজিলেটররা ছুটে এসে অশান্ত পরীক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শুনিয়ে পরীক্ষা দিতে অনুরোধ করতে থাকলেন। ঠিক তখন কেন্দ্রের বাইরে মিছিলের শব্দ শোনা গেলো- “প্রহসনের নিয়োগ বাতিল করো, করতে হবে! জয় বাংলা।” পরবর্তীতে বাকৃবি ক্যাম্পাসের কিছু পরিচিত জনদের নিকট থেকে জেনেছিলাম যে, ছাত্রলীগের তালিকা থেকে কিছু প্রার্থী বাদ রেখে মহাপরিচালক নাকি কিছু ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের নিয়োগ দেয়ার পক্ষে ছিলেন। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাথে মতৈক্য না হওয়াতে পরিকল্পিতভাবেই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করার ফন্দি করা হয়েছিলো আগেভাগেই। সে কারনেই ছাত্রলীগ সভাপতি অমন নির্ভাবনায় আমাদের সাথে হাসি তামাশায় মেতে উঠেছিলো বাসে চড়ে পরীক্ষা দিতে যাবার সময়।

কিন্তু মৎস্য বিজ্ঞানী হবার খুব শখ ছিলো আমার। মাঝারি ধরনের একাডেমিক ফলাফল সত্ত্বেও খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছিলাম চাকরিটা পাবার আশায়। সে আশায় গুড়ে বালি যখন পড়লো তখন আমিও অসৎ পন্থায় পা বাড়ালাম। পুনরায় লিখিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষিত হলে আমার এক নিকটাত্মীয়কে গিয়ে ধরলাম, তিনি শেখ মুজিব সরকারের আমলে গুরুত্বপূর্ণ উচ্চ পদে সরকারি চাকরি করতেন এবং আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাদের সাথে ঘনিষ্ঠতা ছিলো। তিনি তৎকালীন মৎস্য মন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করে আমার বৃত্তান্ত দিলেন এবং খুবই জোরালোভাবে অনুরোধ করলেন যেনো চাকরিটা নিশ্চিত হয়। এবার লিখিত পরীক্ষার কেন্দ্রও ঢাকায় করা হয়েছে, যেহেতু চাকরিটা আমার খুব প্রার্থীত তাই মামার জোরের চিন্তা না করে ভালো পরীক্ষা নিশ্চিত করতে জোরালো প্রস্তুতি নিলাম। কারন মন্ত্রী নাকি বলেছিলেন- লিখিত পরীক্ষায় পাশ করতে পারলে তিনি দেখবেন!

জানি না মামার জোরে নাকি আমার ইচ্ছার জোরে প্রকল্প ভিত্তিক চাকরিটায় আমি চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পেয়ে গেলাম! যৌবনের টগবগে তারুণ্যে দেশের জন্য কাজ করার প্রবল বাসনায় মৎস্য গবেষণায় বিশেষ অবদান রাখতে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯৮ সালের জুলাই মাসে নির্ধারিত কর্মস্থলে একঝাক নবীন কর্মকর্তার সাথে যোগদান করলাম খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলায় অবস্থিত মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউটের লোনা পানি কেন্দ্রে। শুরু হলো সরকারি চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতা, যোগদানের প্রথম দিকে সহকর্মীদের সাথে মিলেমিশে হাসি আনন্দে পার হচ্ছিলো বেশ। যতটা না চাকরি তারচেয়ে বেশি যেনো সময়টাকে উপভোগ করা, নয়টা পাঁচটা অফিসে যাওয়া আসা আর বিকালে দলবেঁধে মোটর বাইকে চড়ে একেকদিন একেক এলাকায় ঘুরে ঘুরে পাইকগাছার পথঘাট পরিচিতি। তখনো আমি নিজে মোটর সাইকেল চালাতে পারি না কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পেয়েই একটা জাপানী হোন্ডা-৮০ বরাদ্দ পেয়ে যাই!

এই পর্বের সারকথা হলো দীর্ঘ একুশ বছর পর ক্ষমতায় আসীন হয়েও বাংলাদেশের রাজনৈতিক সাংস্কৃতিতে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারি চাকরির নিয়োগে যোগ্যতার পরিবর্তে দলীয় আদর্শে বিশ্বাসী ছাত্রলীগের নিয়োগের অতীত ধারাটিই বজায় রাখে। যদিও আমার সাথে নিয়োগ পাওয়া সহকর্মীরা বিভিন্ন আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন, হয়তো আমাদের নিয়োগ পরীক্ষা ঢাকায় স্থানান্তর হওয়াতে অধিকাংশ প্রার্থীকে নিরপেক্ষভাবে যাচাই করে নিতে পেরেছিলো নিয়োগকারী কতৃপক্ষ। তবে আমার মতো অধিকাংশেরই নিয়োগ পাবার জন্য কাউকে না কাউকে দিয়ে সুপারিশ করা লেগেছিলো এটা মোটামুটি নিশ্চিত। কিন্তু এটাও নিশ্চিত যে আমরা কেউই ঘুষের বিনিময়ে প্রকল্পভিত্তিক সেই সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাবার চেষ্টা করিনি। সেক্ষেত্রে তখনো দলীয় প্রভাব ব্যবহার করার প্রবণতা ছিলো কিন্তু জবরদখল করা বা টাকার লেনদেনের মাত্রায় লাগামও ছিলো কিছুটা।

(চলবে)

লেখা: পল্লব খন্দকার

সত্ত্ব: দৈনিক আলোকবর্তিকা। 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

https://www.moralparenting.org/

Categories

© All rights reserved © 2023 দৈনিক আলোকবর্তিকা
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: CloudVai-ক্লাউড ভাই