(১)
বিরহ গাঁথার প্রিয়া আমি
– আল্পনা কুণ্ডূ
চিন্তায় তোমার ,
পুড়িয়েছি নিজেকে
বিঁধিয়েছি শরীরে শত অপমানের তীর
আজ তুমি ভুলেছ আমাকে
বেঁধেছ অন্যের কাজলে নীড়
বিরহ গাঁথার প্রিয়া আমি
বিস্তৃত তার বিরহ দিগন্ত
ভাবনা ঘেরা পলকে তাই
দুটি চোখ আজ পরিশ্রান্ত
অভিমানের এই বাঁদর খেলায়
হয়েছে
মন আজ বড়োই ক্লান্ত
পথ ভ্রষ্ট
অসহায় পথিক আমি
ভালবাসা
আমার হয়েছে ব্যর্থ
জীবনের এই বেহিসেবী কাব্যে
আঁকে প্রতি পাতায় শুধু তোমার ছবি
ভাবনা তোমার দেয় বেদনা
হয় শব্দ হারা কেবল কবি
রাতের তারায় দুচোখ রেখে
মেখেছিল প্রেম তোমার ঠোঁটের তিল
অনুভূতি জীবিত কেবল নিঃশ্বাসে
কবিতা আমার হারায় অন্ত্যমিল।
(২)
ভুলে যাও
– মরিয়ম ইসলাম
ভুলে যাও,
যা ভালোবেসে দিয়েছিলে আমায়,
সুপ্ত প্রতিভার বিকশিত প্রদীপ ।
ভুলে যাও
স্পর্শের মুখরতায় রঙিন স্বপ্নদীপ।
ভুলে যাও তোমার মুখে নন্দিত রুপ বৈচিত্রের শৈল্পিক কথকথা।
ভুলে যাও কল্পনায় আঁকা চরিত্রের রুপকথার গল্পমাখা।
ভুলে যাও অপ্রোয়জনীয় কথার ঝুড়ির নি:শব্দ আওয়াজ।
ভুলে যাও ইচ্ছের পাহাড়গুলির
অবচেতন আর্তনাদ।
ভুলে যাও অমানিষায় রাত জাগা কত শত গল্প, কথার ঝুড়ি নিয়ে অকপটে ভোরের আলো দেখা।
ভুলে যাও তোমাকে পাওয়ার প্রানান্ত আকুতি।
ভুলে যাও সব দু:সহ যন্ত্রণা আমাকে না পাওয়ার।
ভুলে যাও সেদিনের প্রেমময় কথার স্তুপ।
সব ভুলে যাও তুমি।
অপ্রেমিক হও তুমি।
যেনো আমার ছায়াও তোমাকে স্পর্শ না করে।
ভুলে যাও সমস্ত দ্বিধা আমাকে নিয়ে।
ভুলে যেওনা, এ রাস্তা মাড়ানো সহজ ছিলোনা।
কণ্টকাকীর্ণ, অপরিচ্ছন্ন,তীব্র যন্ত্রণাদায়ক যা অস্বাস্থ্যকর।
ভুলে যাও জ্যোৎস্না দেখার আকষ্মিক সপ্ন।
ভুলে যাও একসাথে হাটার নন্দিত আনন্দ।
ভুলে যাও সব বিভেদের অপ্রতাশার উপলব্ধি।
ভুলে যাও আমার হৃদয়ে তোমাকে না পাবার দুর্বিষহ যন্ত্রণা।
সব ভুলে যাও তুমি।
আমার দৃষ্টিতে যে নিজেকে দেখতে সেটুকুও ভুলে যাও।
ভুলে যাও আমাদের এক আত্না ছিল।
ভুলে যাও আমার অস্তিত্বের বাঁধন ছিন্ন করে।
ভুলে যাও আমার ভালোবাসার নিকোটিনে
তোমায় আঁকড়ে ধরে রাখার ক্ষমতা!
ভুলে যাও,
যা কিছু আমার ছিলো তোমার তরে।
ভুল করেভেবে নিও এ সবই নিছক কল্পনা মাত্র।
মিনতি করি ভুলে যাও তুমি
আমায় মনেই রেখোনা।
(৩)
রূপসী শরৎ
-লাবনী খানম
ভোরের আকাশে হিমেল বাতাসে
দিবাকর দেয় ইশারা ,
ভাদরের বেলা কুসুমের মেলা
উৎসবে মাতে যে কারা?
শিউলি ফুলেতে অলির হুলেতে
কানন ভরে গো ঘ্রাণেতে,
শিশিরের রেণু বাজায় যে বেণু
সুর তুলে যায় প্রাণেতে।
কাশফুল ফোঁটে তরুণীরা ছোটে
ওই যে নদীর বুকেতে,
প্রেমের চাদরে সখার আদরে
জীবন ভাসায় সুখেতে।
শাপলার হাসি বিলে যায় ভাসি
বাংলার ঋতু শরতে,
শতদল এসে মেলে অবশেষে
বিলের প্রতিটি পরতে।
তালের পিঠায় স্বাদ যে মিটায়
মায়ের হাতের পরশে,
রূপসী শরৎ দেখায় দরদ
মানব জাতির হরষে।
সংকলনঃ দৈনিক আলোকবর্তিকা।
চমৎকার কথার শৈপ্লিক রুপ।