আগুন দিলে কিছু রান্না নিজেরাই হয়ে যায়
-মিঠুন কুমার সমদ্দার
কিছু না লেখার চেয়ে কিছু লেখা ভাল। সব কিছু সংগ্রহ করা দেয়ার জন্য। সামনে বিস্তৃত মেঘরাশি। পাদদেশে পাহাড়। চলমান। বিশাল জলরাশির কূলে দুটো ফড়িং গা ঘেঁষে রোদ পোহানো। প্রেমিকার চেয়ে প্রেমিকার ছায়া বড়। মেঘ দৌড়াচ্ছে। বাতাস অনুকুলে। আমি গাছের নিচে বসে বই পড়ছি। তুমি গাছের উপরে বসে পড়ছ মেঘ। মেঘে আমি ছোটবেলায় হাতি দেখতাম। বৃদ্ধ হাতিরা আজ আর ঘরে থাকে না। বৃদ্ধাশ্রমে জায়গা কম। তাই সংগ্রহ করা সব জিনিস উলুবনে ছড়িয়ে দিতে হয়। আমি এখন বাচ্চাদের বই পড়ছি। মেঘে তুমি হাতির বদলে দেখছো বই। মনের অনুকুলে জীবন স্রোত মনের অজান্তে ঢুকে পড়ছে।
দিন দিন যত সহজ হই ততই আবিস্কার করি আমার মধ্যে পরিত্যক্ত রেলপথ
-মিঠুন কুমার সমদ্দার
মেয়েরা নেয়। শরীরে ও মনে। প্রকৃতি জুড়ে আষাঢ় আবির্ভাব। কদমের গা থেকে ঝরা জল যেন গিয়ে লাগে হাসের পালকে। ছেলেরা দেয়। শরীর থেকে খসে পড়ে যেন সাপের খোলস। একদল বন্য পশুর মাতম। মনের কাছাকাছি তাই যাওয়া হয়না ছেলেটার। দূর থেকে দেখে নদী পাহাড় ভাঁটফুল। মেয়েটা শোয়। দূরের সব নদী পাহাড় কাশফুল এসে তাকে ঘিরে রাখে। মনের নাগাল পেলে নদী ভ্রমন ছাড়াও গঙ্গা ফড়িং আনন্দে বাঁচে।
জীবনধারা
-নাঈমা রুম্মান রুমা
হৃদয়ের গহনে রচি চির আনন্দ ধাম,
নিত্য করে যাও তারই সুধা পান।
মোচন করে সব বন্ধন যত,
নব নব মহিমায় হও উদ্ভাসিত।
বিনাশ হোক আছে যত হৃদয় দহন
মুক্ত গগনে, মুক্ত পবনে, মুক্ত আলোকধারা,
তাঁরায় তাঁরায় বাজাও তোমার নীরব বীণার গান।
ঝড়ের রাতের দীর্ঘশ্বাসে নীদ্রাহীন প্রাণে ডেকে বলে,
শূণ্য প্রাণে চলেছো কোথা তুমি হে মুক্ত মহীয়ান!
একা তোমায় করেছে কে নিবিড় প্রেমে বেঁধে?
অন্ধলোচন ত্যাগী এসো হে মঙ্গলদায়িনী
তাই তো তোমার নিমন্ত্রণে শান্ত আমি, স্নিগ্ধ আমি,
সম্মুখে ধাই জীবন ধাঁরা বেঁয়ে।
দুর্বলের কালরাত্রি
-সবুজ শামীম আহসান
সোমত্ত মাছেদের স্বাধীন
ভ্রমণবিলাসে কেবলি উদ্ভট কারেন্ট জাল।
শতকোটি মীনের কান্নায়
বাতাসের সারা চোখে ভরা বেদনার জল।
দুবলার চরে শুটকি শুকায়
অসহায় শ্রমিকের কষ্টের কালো আগুনে।
মহাচোর মহাজন নাচে
মহাপ্রাসাদের তলে কৃষ্ণ ফুলের ফাগুনে।
অতিপ্রাকৃতের আরশ যে
কেঁপে কেঁপে ওঠে কিন্তু মানুষের মন নয়।
নির্দয় দুপুরের ভবনে
নিত্য রাক্ষুসি খানার অতি আয়োজন হয়।
আচমকা অতিমারির ঝড়ে
চরশ্রমিকদের কপালে নিয়ত গণকবর।
দুর্নীতির জ্বরে স্বপ্ন মরে
কাগজে ছাপে নাতো কভু ওদের মৃত্যু খবর।
ক্ষমতার ওজরে মহীর
প্রাণিরা বন্দি দশায় সময়ের কারাগারে।
অন্তে মানবিক উকিলের
মামলা বিবেকের অতি উচ্চ আদালত ঘরে।
প্রেমহীন পৃথিবীতে সর্বদা
ব্রাত্যজন নিঃসহায় দুর্বলের কালরাত্রি।
অন্ধ জাতি দেখে নাতো বাতি
আবাল বৃদ্ধ বনিতা আঁধারের জলযাত্রি।
সংকলনেঃ দৈনিক আলোকবর্তিকা
Leave a Reply