কুঁড়েঘর
– কামনা ইসলাম
দেখেছি আমি বাগান বাড়ির
ছোট্ট কুঁড়ে ঘর,
যে ঘরে ছিল সবাই আপন
ছিলো না কেউ পর।
হাসি ছিলো খুশি ছিলো
ছিল আকাশ-মীরা
দিনের বেলা একমুঠো ভাত
পাইনি খেতে তারা।
ক্ষুধার জ্বালায় আকাশ-মীরা
ছিড়তো গাছের ফল
কলাই সিমের সাথে খেতো
এক এক গ্লাস জল।
সকাল বেলা নুটো- সুটো
দুপুর বেলা রুটি
বিকেল বেলা ধরে কাটতো
মিয়া বাড়ির খুঁটি।
সাঁঝ এসেছে সূর্য ডোবে
মা বুঝি ঐ এলো
আকাশ-মীরার হাসি দেখে
মাও হেসে দিলো।
ছোট্ট দুটো সোনা রেখে
কাজে যায় মা
সারা দিনে একবারও
তাদের দেখে না।
নাওয়া খাওয়া হয় কি তাদের
পেটে কি আছে ভাত
মা জননী হিসাব মেলায়
শুন্য তার হাত।
ভাগ্য বড় নির্দয় নিষ্ঠুর
বোঝা বড় দায়
পরের সন্তান কোলে নিয়ে
দিনটা কেটে যায়।
কুঁড়ে ঘরে তবুও সুখ
মা আছে পাশে
রাতের বেলা আকাশ-মীরা
মায়ের সাথে হাসে।
সারা দিনে হয়না দেখা
লক্ষী মায়েের মুখ
মায়ের বুকে খোঁজে ওরা
সারা দিনের সুখ।
@@@@@@@@@@@@@@@@@
শান্ত নদীর জল
– নাজির হোসেন
জলের মতো নরম দেহ নিয়ে,
জীবনের সাগরে সাতরে বেড়াই।
মেঘের মতো চোখের কোনে অশ্রু নিয়ে,
জীবনের অম্বরে অবিরাম হাতরে বেড়াই!
কতোদিন থেমে গেছি, কতবার পড়ে গেছি,
পড়ে গিয়ে ওঠে গেছি, নিরুপায় হেঁটে গেছি!
অন্ধকারে কতো আমি ভয়ে ভয়ে কেঁদেছি,
শান্ত হয়ে তবু আমি আশায় বুক বেঁধেছি!
কতো আশা মরে গেছে,
কতো চেষ্টার হয়েছে বিফল!
বাষ্প হয়ে চোখ থেকে উড়ে গেছে,
কতো কতো জল!
কতোবার হেরে গেছি,
জীবনের কতো চাওয়া হয়েছে নিষ্ফল!
অকারণে কতো আমি হয়েছি যে দোষী,
নিদারুণ সয়েছি ধকল!
জানেনা তো কেউ, কতোবার-
পাষাণ পাথরে আমি বেঁধেছি এ বুক!
আঘাত এসেছে বুকে! বার বার-
ঝড় এসে নিয়ে গেছে সুখ!!
জীবন থামেনি কভু-
নদীর জলের মতো তবুও জীবন চলে অবিরল!
আবেগের ঢেউ এসে হঠাৎ হঠাৎ-
বেসামাল করে তোলে শান্ত নদীর জল।
@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@@
এটাই বুঝি প্রেম
– সালমা বিশ্বাস
মনের গহীনে খুব করে
গেঁথে যাওয়া একটা মানুষ
যে মানুষটা নিজের অজান্তেই
মনটাকে চুরি করে নিয়েছে
মানুষটার জন্য রাত জেগে
বসে অপেক্ষা করা
তাকে অনুভব করে
বার বার নিঃশেষ হয়ে যাওয়া
ব্যাকুল আর্তনাদে একটু
কাছে পাওয়ার আশা
অথচ তাকে কখনো বলা হয় না
বা বুঝানো হয় না
কতোটা ভালোবাসি !!
তাকে বলা হয় না
প্রতিদিন সন্ধ্যা নামে
শুধু তার নামেতেই
গোধূলী রঙ লাজে লাল হয়
শুধু তার দৃষ্টির ছোঁয়াতে
চাঁদের আলো এসে
গল্পের আসর জমায় তারি আহ্বানে
ঝিঁ ঝিঁ পোকারা কাঁন্না থামায়
শুধু তারই কথার নেশাতে !!
প্রিয় মানুষটাকে
কখনো চোখে চোখ রেখে
জানিয়ে দেওয়া হয়নি
ভালোবাসি তোমায়
খুব ভালোবাসি
হুম খুব ভালোবাসি !!
তোমার হাসি তোমার মায়াময় কন্ঠের
কবিতা আবৃত্তি ছন্দে কথা বলা
তোমার আবেগমাখা শিশু সূলভ অবাধ্য প্রকৃতির বিচরণ
সত্যি আমায় খুব আহত করে
আমার খুব ভাল্লাগে
যখন তুমি চোখ রাঙ্গিয়ে বকো আমায়
আমার খুব ভাল্লাগে !!
আপন করে তোমাকে
কখনো পাওয়া হবে না
সেটা জেনেও আমি তোমাকে ভালোবাসি
নীরবে ভেবে যাই
তোমার জন্য আমার প্রতিটা মুর্হুত
কি নিদারুণ যন্ত্রণায় কাটে
দেখতে চাওয়ার কি অসহ্যকর অনুভুতি
ঠি’ক বুঝানোর ভাষা নেই
তবুও ভালোবাসি
হুমম, তবুও ভালোবাসি তোমায় !!
জানো তো,
বিধাতা তোমাকে আমাকে
আলাদা করে দেননি
বরং জন্মের পরেই তুমি আর আমি
হলাম ভেদাভেদ
সমাজের নিয়মগুলো আমি উপেক্ষা করে
এই জগত সংসারে
আমার বংশ পরম্পারাকে
অপমানের গ্লানী মাথায় দিয়ে
নিজের ভালোবাসার স্বীকৃতি দিতে চাইনি !!
কাউকে ভালোবাসার
সবটুকুই দিয়েও পাওয়া হবে না জেনেও
এক মন এক আত্না একাকার করে
নীরবে ভালোবেসে যাওয়া
তার মঙ্গল কামনার প্রতি
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা
আল্লাহর কাছে দুটি হাত তুলে তার জন্য প্রার্থনা করা
এটাই বুঝি প্রেম
আর এটাই বোধ হয়
পৃথিবী শ্রেষ্ঠ শুদ্ধতম প্রেম
বা ভালোবাসা
আমি তোমারে নীরবে সেই ভালোবাসাটাই বেসে যেতে চাই
দেবে তো সেই অধিকার আমায়
তোমায় বড্ড ভালোবাসি গো
হুম বড্ড ভালোবাসি…….!!
প্রচ্ছদের ছবি: বনানী ঘোষ।
কবিতা সংগ্রহ: উজ্জ্বল মাহমুদ।
সংকলন: দৈনিক আলোকবর্তিকা।
Leave a Reply