1. admin@dainikalokbortika.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২৯ অপরাহ্ন
সমালোচনা বা দ্বিমত পোষণ: গণতন্ত্রের মূল কথা পুনঃ ফ্যাসিজমের আশংকা: প্রসঙ্গ যখন বিএনপি সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (পঞ্চদশ পর্ব) জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪: খুলনার ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেট এ সফল কো-অপারেটিভ এর উদ্যোগে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪ পালিত সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (চতুর্দশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (ত্রয়োদশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (দ্বাদশ পর্ব) নতুন বাংলাদেশ: জেন-জি প্রজন্মের স্বপ্ন কি আদৌ বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব? একটি বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার: দুই হাতে টাকা বানাতে বলতেন শেখ হাসিনা সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (একাদশ পর্ব)
এই মাত্র পাওয়া
সমালোচনা বা দ্বিমত পোষণ: গণতন্ত্রের মূল কথা পুনঃ ফ্যাসিজমের আশংকা: প্রসঙ্গ যখন বিএনপি সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (পঞ্চদশ পর্ব) জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪: খুলনার ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেট এ সফল কো-অপারেটিভ এর উদ্যোগে ৫৩তম জাতীয় সমবায় দিবস ২০২৪ পালিত সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (চতুর্দশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (ত্রয়োদশ পর্ব) সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (দ্বাদশ পর্ব) নতুন বাংলাদেশ: জেন-জি প্রজন্মের স্বপ্ন কি আদৌ বাস্তবায়ন হওয়া সম্ভব? একটি বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার: দুই হাতে টাকা বানাতে বলতেন শেখ হাসিনা সুবিধাবাদ জিন্দাবাদ: ১৯৯০ সাল থেকে আমার দেখা চরিত্রহীন জাতীয় রাজনীতি (একাদশ পর্ব)

বাঙালি চুপ করে থাকে চাকরির ভয়ে: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

  • Update Time : বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪
  • ৩২০ Time View

চুপ করে আছে বলেই যে চুপ আছে– জাপানিদের সম্পর্কে এটা মনে না-করার প্রবণতা বেশ ব্যাপ্ত। এ নিয়েও গল্প রয়েছে। ধরা যাক একটা হাতি এসেছে। সেখানে যদি একজন ইংরেজ থাকে তাহলে সে ভাববে, হাতিটি নিশ্চয় আমাদের উপনিবেশগুলোর কোনো একটি থেকে এসেছে। জার্মান ভাববে, আমাদের দেশে হাতি নেই। কিন্তু থাকলে সেটাই হতো পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ হাতি। আমেরিকান ভাববে, বেশ তো দেখতে; এটি আমি কিনে নেব। ফরাসির চিন্তা হবে, কত সুস্বাদু খাবার না জানি এর মাংস দিয়ে তৈরি করা যায়! আর জাপানি ভাববে, হাতিটি কী ভাবতে পারে? চুপচাপ থেকে জাপানিরা কেবল মতলব ঠিক করে যে, তা নয়। অন্যে কী মতলব ফাঁদছে, সেটাও সে উদ্ধার করতে চায়। এ জন্যই জাপানিদের নিশ্চুপতা এত গভীর।

গল্পে বাঙালির উল্লেখ নেই। বাঙালিকে নিয়ে কে-ইবা ভাবে! সে নিজেই ভাবে না। কিন্তু ধরা যাক, হাতিটিকে একজন বাঙালিও দেখল। তার প্রথম ভাবনা হবে, চাপা দেবে না তো! সেই ভয় কাটিয়ে উঠলে ভাবতে পারে, হাতিটির মালিকের না জানি কত টাকা! আচ্ছা, সে কি আমাকে একটা চাকরি দিতে পারে না? হাতিটির যত্ন-আত্তির জন্যও তো অনেক লোক দরকার।
হাতির সামনে বাঙালিও চুপ থাকবে ঠিকই, কিন্তু জাপানির মতো ভাববে না– হাতি কী ভাবছে। তাকে সে ভয় পাবে। আবার কিছু পাওয়ার আশায়ও থাকবে। তবে শুধুই ভাববে; প্রকাশ করবে না ভাবনা। অন্যকে বলবে না। পার্শ্ববর্তী বাঙালিকে তো নয়ই। পাছে সে সম্ভাব্য চাকরিটা হাতিয়ে নেয়। বাঙালি মাত্রই বাঙালির প্রতিদ্বন্দ্বী। ভয়ের কথা তো অন্য মানুষকে বলবেই না। যত পারে বাহাদুরি ফলাবে।

সব বৈশিষ্ট্যের পেছনেই বাস্তবিক কারণ থাকে; জাতিগত বৈশিষ্ট্যের পেছনেও বটে। ঐতিহাসিক সব কারণ। কত যুগ আমরা বিদেশি শাসনের অধীনে ছিলাম। তারা ছিল ওই হাতির মতোই। যত দূরে থাকে ততই মঙ্গল, কাছে এলে ভয়ংকর বিপদ। পায়ের তলে পিষে ফেলবে। পিষে ফেলেছেও। আর্য, মোগল, পাঠান, ইংরেজ, পাঞ্জাব– সবারই ওই এক কাজ। রাষ্ট্রের প্রতিনিধি পুলিশ এখনও যদি গ্রামে আসে, তবে গ্রামবাসী উৎফুল্ল হয় না, পালাবার কথাই ভাবে। গরিবের ঘরে হাতির পা– এই প্রবচন এমনি এমনি তৈরি হয়নি।

আর চাকরি? সেটাই তো প্রধান জীবিকা আমাদের। কৃষকের কথা আলাদা। সে পড়ে থাকে মাটি আঁকড়ে, যতক্ষণ পারে। মাটি থেকে বিচ্ছিন্ন হলে তার সর্বনাশ হয়ে যায়। কোথায় যে ভেসে যায় চলে, কোনো হদিস থাকে না। কৃষক হাতি দেখে না, কোনো কিছু আশাও করে না। কিন্তু যারা কৃষক নয়, উঠে এসেছে ভূমি ছেড়ে, তারা আর কী করবে চাকরি-বাকরি ছাড়া?

ব্যবসা-বাণিজ্যে বাঙালির উৎসাহ নেই– এ কথা বৈজ্ঞানিক প্রফুল্লচন্দ্র রায় অবিরাম বলেছেন। কথাটা সত্য বটে, তবে আংশিক। বাকি অংশ হলো এই যে, বাঙালির সামনে ব্যবসা-বাণিজ্যের পথ খোলা ছিল না। তাঁর হাতে পুঁজি ছিল না। ব্যবসা-বাণিজ্য যা করবার তা জগৎ শেঠরা, ইংরেজরা, মাড়োয়ারিরা, দিল্লিওয়ালারা আরামসে করেছে। বাঙালি পারেনি। বাঙালির জন্য মোক্ষলাভের পথ ছিল ওই একটিই– চাকরি। পথটা মোটেই প্রশস্ত ছিল না। বিস্তর ঠেলা-ধাক্কা ছিল সেখানে। এখনও আছে। এখন বরঞ্চ আরও বেশি। লাখ লাখ বাঙালি আজ পরিপূর্ণ কিংবা অর্ধবেকার। হাতির লেজ থেকে মাছি তাড়াতে হবে– এই পদের জন্য বিজ্ঞাপন দিক না কোনো হাতিওয়ালা; দেখা যাবে কত হাজার দরখাস্ত পড়ছে এই সোনার বাংলায়।

ওই ভয়, এই আশা– এটা বড় মর্মান্তিক সত্য বাঙালির জন্য। পরাধীনতা এই দেশে পুঁজির বিকাশে সাহায্য করেনি, কৃষি থেকে যে উদ্বৃত্ত এসেছে, তা পাচার হয়ে গেছে কিছুটা; বাকিটা চলে গেছে ভোগবিলাসে। পুনরুৎপাদন কিংবা শিল্পায়নে নিয়োজিত হয়নি। ফলে পরমুখাপেক্ষিতা বড়ই বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনও আমরা ভাবি, পুঁজি আসবে বিদেশ থেকে। সাহায্য, ঋণ– এসব বিদেশিরাই দেবে। আত্মনির্ভরশীল জাতি আমরা কবে হবো কে জানে! বারবার স্বাধীন হলাম, কিন্তু আত্মনির্ভরশীল হওয়া হলো না। বরঞ্চ পরনির্ভরতা বাড়ছে তো বাড়ছেই, যেন অন্তহীন। বিদেশিরা চাকরি দিলে আত্মহারা হয়ে পড়ি; পিঠ চাপড়ে দিলে তো কথাই নেই।

অত্যন্ত গভীরে চলে গেছে আমাদের পরগাছাবৃত্তি। সর্বস্তরেই। পরগাছারা কখনোই স্বাধীন নয়। আশ্রয় চলে গেলে তাদের আর কিছুই থাকে না; সে জন্য প্রাণপণে জড়িয়ে ধরে রাখে সে আশ্রয়কে। আত্মসমর্পণ বেশি বলেই জীবনযাত্রার মান ওঠে না– আমাদের সম্পর্কে এটা যারা বলেন, তারা মিথ্যা বলেন না। মুখ দিয়েছেন যিনি, আহারও দেবেন তিনি– এই যে আত্মসমর্পণ তথা পরনির্ভরতা, সেটাই জনসংখ্যা বৃদ্ধির একটা প্রধান কারণ বললে অত্যুক্তি হবে কি? উন্নত জীবনের আশা কিংবা আকাঙ্ক্ষা কোনোটাই এ মাটিতে আগুন জ্বালায় না; চোখের দৃশ্য-অদৃশ্য জল-মাটিকে কাদাতে পরিণত করে। তাল তাল কাদা দেখা যায় চতুর্দিকে। আমরা রীতিমতো কর্দমাক্ত।

বাঙালি চুপ করে থাকে। ভয়ে– পাছে চাকরি চলে যায়। পাছে কর্তারা বিরূপ হয়, এই ভয় তো আছেই; আরও ঘটনা রয়েছে। সেটা হলো উদ্বেগ। কত কিছু নিয়ে উদ্বিগ্ন সে, তার কি হিসাব আছে? না, নেই। অধিকাংশ বাঙালি কৃষক ঘুমিয়ে পড়ে সন্ধ্যা না-হতেই। তার হাতে আলো জ্বালবার সামর্থ্য নেই। শুয়ে শুয়ে যে ঘুমায়, তা নয়। মশা ও দুশ্চিন্তার দংশনে বড়ই অস্থির থাকতে হয় তাকে; ঘুম আসে না।

চুপ করে আছি বলেই যে নানা বিষয়ে ভাবছি– এটা জাপানিদের সম্পর্কে সত্য হতে পারে; আমাদের সম্পর্কে সত্য নয়। আমরা ভাবনা কিংবা উদ্ভাবনার জন্য প্রসিদ্ধ নই। আর কথা বলে সময় নষ্ট না-করে যে সময় বাঁচাচ্ছি, তা-ও নয়। যা করছি তা হচ্ছে সময় থেকে ছিটকে পড়া, বিচ্যুত হওয়া। তবে সময়ের তো কোনো অভাব নেই, আমাদের জন্য।
‘মানি ইজ নো প্রবলেম’– আমাদের একজন সেনাপতি-কাম রাষ্ট্রপতি বলে গেছেন। আরও সত্য হলো, টাইম ইজ নো প্রবলেম। আমরা অনন্তকাল নিয়ে আছি। তুচ্ছ আমাদের জন্য আজ, কাল কিংবা পরশুর হিসাব।

তাই বলে কি বাঙালি সবাক নয়? বলে কী! যে বাঙালি সুযোগ পেয়েছে, তার মতো সবাক আর কে আছে? কত অজস্র তার বলবান কথা। কেউ শোনে না, শুনলেও মন দেয় না, কিন্তু অন্ত থাকে না কথকতার।

শুরুতে হাতির কথা উঠেছিল। হাতি চুপচাপ থাকে, জাপানিদের মতোই। কিন্তু নিশ্চুপ হাতির একটা বিশেষ গুণ রয়েছে, যেটা নিশ্চুপ জাপানিদের মনে হচ্ছে নেই। হাতি ভোলে না। মনে রাখে এবং শোধ নেয়। জাপানিরা এ বিষয়ে ভিন্ন রকম। পত্রিকায় ক’দিন আগে একটি চিঠি ছাপা হয়েছে। দু’জন জাপানি নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল। জাপানি ভাষা বোঝেন এমন একজন বাঙালি তাদের কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেছেন। তারা বলছিল, হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে রুশরা বোমা ফেলেছিল! এ থেকে মনে হয়, জাপানিদের পাঠ্যপুস্তকে ইদানীং এ রকমই লেখা হচ্ছে। নিজেদের কৃতকর্মের জন্য তারা কোরিয়ার কাছে মাফ চেয়েছে ইতোমধ্যে। ওদিকে আমেরিকানদের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে অ্যাটম বোমা ফেলার অপরাধ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বসে আছে! ইতিহাস বিকৃতির এই শিক্ষাটা আমরা যেন জাপানিদের কাছ থেকে না নিই।

মূল প্রশ্নটা হলো, আমরা কতকাল এমন চুপচাপ বসে থাকব? মাঝেমধ্যেই ক্ষেপেটেপে উঠে মুক্তিযুদ্ধ করব, তারপরে আবার সব চুপচাপ? বোবার শত্রু নেই শুনেছি, কিন্তু আমাদের শত্রু তো চতুর্দিকে। আমরা আপস করতে চাইলেও তারা আপস করবে না। আমাদেরকে একেবারে শেষ করে দেবে।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

https://samakal.com/opinion/article/237098/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%99%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF-%E0%A6%9A%E0%A7%81%E0%A6%AA-%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%AD%E0%A7%9F%E0%A7%87

সমকাল পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ থেকে সংগৃহীত

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

https://www.moralparenting.org/

Categories

© All rights reserved © 2023 দৈনিক আলোকবর্তিকা
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: CloudVai-ক্লাউড ভাই